আপডেট

আত্নতত্ত্ব যে জেনেছে, দিব্যজ্ঞানী সেই হয়েছে!

কুরআ‌নের পাখি আল্লামা সাঈদী রহ.- এর কিছু ঐতিহাসিক উ‌ক্তি!

Paragraph about 'Causes of Failure in English' for all classes

রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

হাঙ্গেরির ডেব্রেসেন বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ | হাঙ্গেরি ফুল-ফ্রী স্কলারশিপ-২০২৩| Hungary Scholarship-2023

এ ডি আর এস: বাঙালীদের নতুন প্রযুক্তি | এ ডি আর এস কি ? | ADRS System in cricket

ড. ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা দেওয়া কতটুকু যুক্তিসঙ্গত?

'যে কথা বলতে মানা': এডভোকেট সাজজাদুল ইসলাম রিপন

বিমান ও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন যেসব রাষ্ট্রপ্রধান!

বিপ্লবীদের গুপ্তহত্যা ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিআইইউ শিক্ষার্থীরা

ন্যায় বিচারের বানী; অতঃপরঃ সাজজাদুল ইসলাম রিপন

ন্যায় বিচারের বানী; অতঃপরঃ 

বিচার এর প্রয়োজন মূলত সমাজ নির্মাণ এর তরে। আর এই সমাজের প্রয়োজন হয়েছে মানুষের বসবাসের নিমিত্তে। কথাগুলো অনেক পুরানো। তবুও জীবন চলতে চলতে পুরানো কথাগুলোকে সময়ের সাথে বিশ্লেষণের প্রয়োজন হয়। কারণ সমাজ পরিবর্তনশীল। তাই সামাজিক আচরণ গুলোও পরিবর্তিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর এ পরিবর্তিত সমাজেও আমরা কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য খুঁজে বেড়ায়। ন্যায় বিচার এর অন্যতম।

ন্যায় বিচারের বানী; অতঃপরঃ

আসলে মহান স্রষ্টা ব্যাতিত আর কেউ ন্যায় বিচার করতে পারে না। মানুষ কেবল চেষ্টা করতে পারে। এ চেষ্টার চুড়ান্ত পর্যায় হতে পারে একজন বিচারকের জন্যে মুক্তির পাথেয়। কারণ বিচার দিনে বিচারকদের বিচারে ৩টি মানদন্ড কাজ করবে সেদিন। ৩ প্রকারের বিচারকের মধ্যে কেবল এক প্রকারই জান্নাত প্রাপ্ত হবে। যিনি সত্য উদঘাটন না করে রায় দেন ও যিনি সত্য উদঘাটন করে উল্টো রায় দেন, এ ২ ধরনের বিচারক জাহান্নামী। আর যিনি সত্য উদঘাটন করে তদানুযায়ী রায় দেন কেবল তিনি জান্নাতি।

আজ বিশ্বে সর্বত্রই ন্যায় বিচারের অভাব। দেশে দেশে শাসন গুলো চলছে, তবে এতে মানুষ খুব একটা উপকৃত হচ্ছে না। সব জায়গায় শোষণ আর বন্ঞনা, লাঞ্চনা। মানুষেরা তার মানবাধিকার পাচ্ছে না। এ সবের পিছনে রয়েছে ন্যায় বিচারহীনতা। কারণ সঠিক বিবেকের ব্যবহার যেমন ব্যক্তির আত্মউন্নয়ন ঘটায়, তেমনি সঠিক বিচার, ন্যায় বিচার উন্নয়ন ঘটায় সমাজের ও দেশের। উন্নয়নের মূলমন্ত্র হলো ন্যায় বিচার ও সুষম বন্টন যা ন্যায় বিচার থেকে সৃষ্ট। কেবল ক্ষমতার ধারক, বাহক হলেও ন্যায় বিচার করা যায় না। এর জন্যে প্রয়োজন ন্যায় পরায়ন মন।

এ ন্যায় পরায়ন মন ও বিবেক সৃষ্টিতে কাজ করে শিক্ষা। তাই শিক্ষার মান ও উদ্দেশ্যে প্রকৃত অর্থে মানুষের কল্যানে, সমাজ বিনির্মানে কতটুকু ভূমিকা নিচ্ছে পলিসি তৈরি কারকদের ভাবতে হবে প্রতিনিয়ত। থাকতে হবে এর উপর প্রতিনিয়ত গবেষণা। কারণ সমাজ পরিবর্তনের সাথে সাথে শিক্ষার ধরণ ও মানেও হয় পরিবর্তন। তাছাড়া নৈতিক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের বিকল্প নেই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায়। এটা ঠিক যে মানুষ বিচার চাই না, চাই ন্যায় বিচার। 

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে একটা দেশের লিগ্যাল সিস্টেমের রয়েছে বড়ো ভূমিকা। দেশে দেশে একটা শ্লোগান আজ সমাদৃত, 'আইনের শাসন'। কেবল আইনের শাসন ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যে যথেষ্ট নয়, যদি না সেখানে মানুষের শাসন বিদ্যমান থাকে। "Law shouldn't rule, men should rule" (Plato). কারণ মানুষ যখন শাসন করবে, সেখানে মানুষের মানবীয় গুনাবলী গুলো প্রাধান্য পাবে। বিচারক ঘটনার প্রতিটি পরিস্থিতি বিচার, বিশ্লেষণ করবে মানুষ হিসাবে। ঠাঁই পাবে মানবিকতা। আর আইন কে শাসন করতে দিলে, তখন বিচার হবে নিষ্ঠুর ও রুঢ়, যা কাম্য নয়।

তাই মানব কল্যানে, সমাজ নির্মাণে অধিকতর ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিচারকের বিচার করতে যেমনি তার বিচারের ক্ষমতা দরকার, তেমনি দরকার তার বিচক্ষণতা, আইনের জ্ঞান, আইন বিজ্ঞানের জ্ঞান, লিগ্যাল মাইন্ড, লিগ্যাল এনালাইসিস ও ইকুইটি জ্ঞান। সর্বোপরি প্রয়োজন নিজের ব্যাক্তিক স্বাধীনতা ও ন্যায় বিচার করার মানসিকতা। কারণ এ সবের প্রয়োগে হতে পারে ন্যায় বিচার। নতুবা শুধু আইন দিয়ে ন্যায় বিচার সম্ভব নয়। 

লেখক- সাজজাদুল ইসলাম রিপন

এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের স্বনামধন্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি (বি.আই.ইউ) এ সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম