জর্দা ও বিড়ি সিগারেট খাওয়া হারাম। এই ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহর প্রায় সব আলেম একমত। ডা. জাকির নায়েক এক লেকচারে বলেছেন, "বিশ্বের প্রায় ৪০০ আলেম এইগুলো খাওয়া হারাম ফতওয়া দিয়েছেন।" ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার রহ. বলেছেন, "বিশ্বের প্রায় সব আলেম এগুলো হারামের ব্যাপারে একমত।"
হারামের পক্ষে সরাসরি নস না থাকার কারণে হানাফি মাজহাবের কেউ কেউ এটাকে মাকরুহে তাহরিমি বলেছেন। কিন্তু সরাসরি নস না থাকলেও এর বৈশিষ্ট্য ও ক্ষতিকর প্রভাবের ফায়সালা নির্ণয়ে এতো বেশি আয়াত ও হাদিস বর্ণিত হয়েছে, যা খুব দৃঢ়ভাবে হারামের মত'কে শক্তিশালী করে। আর মাকরুহে তাহরিমি হলেও সেটা হারামের কাছাকাছি। কোনোভাবেই এটাকে সাধারণ বৈধ বলার সুযোগ নেই। এমন ফতওয়া নিঃসন্দেহে বিভ্রান্তিকর।
আরো মারাত্মক বিভ্রান্তি ও অদ্ভুত যুক্তি হচ্ছে, এর ক্ষতিকর দিকটা ফরমালিন খাবারের সাথে তুলনা করা। অর্থাৎ জর্দা ক্ষতিকর হওয়ার কারণে যদি এটা হারাম হয়ে যায় তাহলে ফরমালিন যুক্ত খাবারও হারাম হয়ে যাবে।
এটা সম্পূর্ণ একটা উদ্ভট যুক্তি। কেননা খাবার ফরমালিন যুক্ত হলেও সেটা আল্লাহর পক্ষ থেকে খাবার হিসেবে দেওয়া হয়েছে এবং এটা পবিত্র খাদ্য। পক্ষান্তরে জর্দা ও বিড়ি সিগারেট কি খাদ্য? এটা পবিত্র নাকি খবিস জাতীয় খাবারের অন্তর্ভুক্ত?
আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
یُحِلُّ لَهُمُ الطَّیِّبٰتِ وَ یُحَرِّمُ عَلَیْهِمُ الْخَبٰٓئِثَ
"তিনি তাদের জন্য পবিত্র জিনিস হালাল করেন ও অপবিত্র জিনিস হারাম করে দেন।"
সন্দেহ নেই যে, জর্দা অপবিত্র, নোংরা ও খবিস জাতীয় কুখাদ্যের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও আরো বহু আয়াত ও হাদিস তো আছেই। তাই এটা কোনোভাবেই বৈধ হতে পারে না। মূলত তারাই এগুলোকে বৈধ বা মাকরুহে তানযিহি বলে ফতওয়া দেয় যারা এগুলোর নেশায় মত্ত হয়ে আছে।
লেখক- শায়খ আসলাম হোসাইন,
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন।