দু'দলের অনড় অবস্থানে বার বার ভোগান্তি পড়ে সাধারণ জনগন। গত কয়েকদিন আগের হরতাল ও আজকের অবরোধ অনেকটা স্বতঃস্ফূর্ত বললে ভুল হবেনা। কারন সংবিধানের দোহাইয়ে নির্বাচনের জায়গাটিতে জনগনের অধিকারের কথাও রয়েছে। এ দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হউক তা এদেশের অধিকাংশ জনগনই চায়। হউক না সে নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ নতুবা বিএনপি সহ সমমনা দল। কিন্তু একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন যে এদেশে অনেক দরকার তা এদেশের জনগন হারে হারে টের পাচ্ছে। কারন বাংলাদেশে অনেক সংকটের অন্যতম হলো সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়া। যা হাজারো নতুন নতুন সংকটের সৃষ্টি করে, আর এর সর্বোচ্চ ভোগান্তিতে থাকে জনগন। কারন দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতি, মুদ্রাস্পৃতি বৃদ্ধি সহ জনগনের উপর চড়া টেক্স নির্ধারণ এক ধরণের অস্বস্তিতে পড়ছে জনগন।
আওয়ামী সরকারের বিগত দেশ পরিচালনায় এর উন্নয়ন কর্মকান্ড এদেশে এখন বরাবরই দৃশ্যমান। খরস্রোতা পদ্মার উপরে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্নফুলী টানেল, এক্সপ্রেস ওয়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, মহাসড়ক গুলো দুই লাইন থেকে চার / আট লাইনে উন্নীতকরণ, দেশে অসংখ্য মডেল মসজিদ নির্মান, প্রতিটি আদালত প্রাঙ্গনে নতুন বড়ো বড়ো ভবন, নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন লাইন স্থাপন, পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণান্ঞলে ট্রেন লাইন স্থাপন, আন্তর্জাতিক মানের নতুন বিমান বন্দর তৈরি ও নতুন টার্মিনাল নির্মাণ, নতুন ইকোনোমিক জোন তৈরি, নৌ-বন্দর তৈরি, সচিবালয় নতুন হাইরাইজ ভবন, সরকারি পুরাতন কোয়াটার নতুন ধরনে উন্নয়ন ঘটানো সহ এমন হাজারো উন্নয়নে এ আওয়ামী লীগের অবদান।
এটা ঠিক যে নিজেদের নির্বাচনে জয়ী করে নিয়ে আসতে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান অর্জন করেছে বহুগুণ। পরপর তিনবার নিজেদের জয়ের আসনে দেখতে অভ্যস্থ এ আওয়ামী লীগ জানে নির্বাচন আসলে কি করতে হয়। পুলিশ কে কিভাবে ব্যবহার করতে হয়, কাকে গ্রেপ্তার করতে হয়, কাদের নতুন গাড়ি কিনে দিতে হয়, কাদের বেতন বাড়িয়ে দিতে হয়, কাদের পদোন্নতি দিতে হয়, কাদের সাংবিধানিক পোস্টগুলোতে নিয়ে আসতে হয়, বিদেশী দেশগুলোর সাথে কেমন ধরনের নতুন নতুন চুক্তি করতে হয়। এমন হাজারো গবেষণা আর কর্মকৌশল এখন আওয়ামী লীগের আয়ত্বে। এ অভিজ্ঞতা পর্যাপ্ত পরিমাণে আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে অর্জন করেছে। কিন্তু এত এত অভিজ্ঞতার মাঝেও এত বছর পরও একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন দেয়ার কৌশল এখনো আয়ত্ত্বে না নিতে পারা, বা এমন আয়োজনের ব্যবস্থা করতে না পারা, এক ধরনের ঘাটতি মনে করলেও খুব বেশি ভুল হবেনা।
লেখক- সাজজাদুল ইসলাম রিপন
এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশেরস্বনামধন্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি (বি.আই.ইউ) এ সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন।