আল্লামা সাঈদী রহ.-এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব:০৯)

 

আল্লামা সাঈদী রহ.

কিছু স্মৃতি, কিছু কথা:

২০০৩ সালে চট্টগ্রাম তাফসির মাহফিলের কর্তৃপক্ষ আল্লামা সাঈদীকে অনুরোধ জানান, তিনি যেন অতীত স্মৃতিচারণ করে তাদের মনজিলে কিছু লিখেন। কর্তৃপক্ষের অনুরোধে চট্টগ্রাম তাফসির মাহফিল সম্পর্কে আল্লামা সাঈদী "কিছু স্মৃতি কিছু কথা" নামে মনজিলে তিনি যা লিখেছেন, তা থেকে সংক্ষেপে মাত্র একটি ঘটনা তাঁর ভাষায় এখানে উল্লেখ করছি:

এরশাদ সরকারের শাসনামলে মাহফিল বন্ধ করার জন্য সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মাগরিবের নামাজের পরে গাড়িবহর আমাকে নিয়ে চট্টগ্রাম তাফসির মাহফিলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পথিমধ্যে সংবাদ এলো, পথেই আমাকে গ্রেফতার করা হবে। কর্তৃপক্ষ কৌশল করে পথের মাঝে আমাকে একটি অটোরিক্সায় উঠিয়ে দিয়ে মাওলানা কামালউদ্দীন জাফরী সাহেবকে নিয়ে মাহফিলে উপস্থিত হতেই জনতা আমার নামে স্লোগান দেওয়া শুরু করলো। আমি এসেছি মনে করে পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করতে এসে দেখে আমি নেই। পুলিশ ছুটলো  খোঁজে। ইতিমধ্যেই আমি নিঃশব্দে মাহফিলে এসে উপস্থিত হলাম। মাহফিল চলাকালে পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করার ঝুঁকি গ্রহণ করলো না। মাহফিল শেষে কর্তৃপক্ষ আমাকে এবং মাওলানা কামালউদ্দীন জাফরীকে মঞ্চের পিছনে একটি ঘরে নিয়ে গেলেন। কর্তৃপক্ষ জাফরী সাহেবকে বেষ্টন করে গাড়ির দিকে নিয়ে গেলো এবং উপস্থিত জনতা আমার নামে স্লোগান দিলো। আমি তখনও সেই ঘরে, পুলিশ গাড়িবহরের পিছনে ছুটতে থাকলো। এরিমধ্যে কর্তৃপক্ষ আমাকে নিয়ে আমার থাকার স্থানে নিয়ে গেলেন।

কর্তৃপক্ষের কৌশলের কারণে প্রশাসন আমাকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়ে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানালো, "উপরের নির্দেশ, একদিনের জন্য হলেও মাহফিল বন্ধ রাখুন, নইলে আমাদের অসুবিধা হবে।" কর্তৃপক্ষ জানালেন, "মাহফিল বন্ধ করলে জনগণ আমাদের ছাড়বে না, আপনারা এ কথাগুলো মাহফিলে আগত জনতাকে বলে দেখুন।"

আওয়ামী শাসনামলেও ১৪৪ ধারা জারী করে মাহফিল বন্ধ করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। বীর চট্টলার ইসলামপ্রিয় তাওহীদি জনতা এই অন্যায়ের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছে। শেষ পর্যন্ত সরকার নতি স্বীকার করে আউটার স্টেডিয়ামে মাহফিল করার অনুমতি দিয়েছে। সেখানে স্থান সংকুলান হয়নি। গোটা শহর অচল হয়ে গিয়েছে। এ ধরণের অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে চট্টগ্রাম মাহফিল ঘিরে, যা ব্যক্ত করতে গেলে বিশাল আকারে এক গ্রন্থ রচিত হবে।

বাধার সমস্ত পাহাড় ডিঙিয়ে চট্টগ্রামের মাহফিল বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ তাফসির মাহফিলে পরিণত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা কুরআনের এই মাহফিলকে আমাদের সকলের জন্য নাজাতের উসিলা বানিয়ে দিন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।

---আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহের একান্ত মুখাপেক্ষী, সাঈদী (২৭/০৯/২০০৩)। 

লেখাটি সংগ্রহেঃ শায়খ আসলাম হোসাইন।

আরো পড়ুনঃ

আল্লামা সাঈদী রহ. এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব-০১)

আল্লামা সাঈদী রহ. এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব-০২)

আল্লামা সাঈদী রহ. এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব-০৩)

আল্লামা সাঈদী রহ. এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব-০৪)

আল্লামা সাঈদী রহ. এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব-০৫)

আল্লামা সাঈদী রহ.-এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব:০৬)

আল্লামা সাঈদী রহ.-এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব:০৭)

আল্লামা সাঈদী রহ.-এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব:০৮)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম