হায় আফসোস ! অমুকে যদি বন্ধু না বানাতাম!

হায় আফসোস ! অমুকে যদি বন্ধু না বানাতাম!

হায় আফসোস ! অমুকে যদি বন্ধু না বানাতাম!

জীবনে পথচালার ক্ষেত্রে সবচেয়ে যারা বেশি ভুমিকা পালন করে থাকে তাদের মধ্যে বন্ধু অতি ঘনিষ্ঠ ও নিকটের হয়ে থাকে। প্রত্যেকের জীবন ও সামাজিকরণে বন্ধুবান্ধবের এক বিরাট ভুমিকা রয়েছে। তবে বন্ধু দুপ্রকারের হয়ে থাকে  সৎ ও অসৎ। সৎ চরিত্রবান মানুষের সংস্পর্শে যারা আসে তারাও নিজেদের জীবনকে সুন্দর, সৎ ও চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। কিন্তু অসৎ মানুষের সাথে এবং তার কাজকর্মের সাথে যারা সক্ষতা গড়ে তুলে, তারা  অসৎ সঙ্গের প্ররোচনায় পাপ কাজে জড়িয়ে পরে। তাদের জীবন হয়ে ওঠে আলোকহীন অন্ধকার গহ্বরের মত।  

রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

"সৎসঙ্গী ও অসৎসঙ্গীর উদাহরণ হলো আতর বিক্রেতা এবং কামারের হাঁপরে ফুঁক দানকারীর মতো। আতর বিক্রেতাদের কাছ থেকে তুমি শূন্য হাতে ফিরে আসবে না। হয় তুমি আতর কিনবে, না হয় তার সুঘ্রাণ পাবে। আর কামারের হাঁপর হয় তোমার ঘর অথবা তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে। তা না হলেও (অন্তত) তুমি তার দুর্গন্ধ পাবে।" [বোখারি : ২১০১]

আর সৎ চরিত্র,  অনুপম বৈশিষ্ট্য ও জান্নাতের সুধা যারা বহন করেন তারাই প্রকৃত মুমিন ও মুত্তাকী। তারাই আল্লাহ ভীরু এবং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রকৃত অনুসারী। কিন্তু যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বাণীকে প্রত্যাখান করে অসৎ মানুষের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছে। কিয়ামতের দিন সেই-সকল বন্ধুরাই তার সবচেয়ে বড় মুসিবতের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তখন সে আফসোস আর বিলাপ করতে থাকবে হায়! তাকে যদি বন্ধু না বানাতাম।

মহান আল্লাহ তা'আলা এ প্রসঙ্গে বলেন-

"যালিম ব্যাক্তি সেদিন নিজের দু‘হাত দংশন করতে করতে বলবে, ‘হায়, আমি যদি রাসূলের সাথে কোন পথ অবলম্বন করতাম! ‘হায়, দুর্ভোগ আমার, আমি যদি অমুককে বন্ধুরুপে গ্রহণ না করতাম!" [ সূরা ফুরকান: ২৭-২৮]

তাফসীরে ফাতহুল মাজীদের বর্ণনায়ঃ

'আল্লাহ তা‘আলা বলেন, কিয়ামতের দিন যারা কুফরী ও শির্ক করে নিজেদের ওপর জুলুম করেছে তারা কিয়ামতের ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে ও নিজেদের অপরাধের কথা স্মরণ করে হাত কামড়াতে থাকবে; যেমন দুনিয়াতে আমরা দেখি মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে হাতের আঙ্গুল কামড়ায় তেমনি কাফিররা কিয়ামতের দিন কামড়াতে থাকবে আর বলবে: যদি আমি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। (তারা হল মানুষ ও জিন শয়তান) হায়! আমি যদি রাসূলের অনুসারী হতাম। এরকমভাবে তারা আফসোস করতে থাকবে। কিন্তু তথায় আফসোস করে আর কোন লাভ হবে না।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:‏ “কখনও কখনও কাফিরগণ আকাক্ক্ষা করবে যে, তারা যদি মুসলিম হত!” (সূরা হিজর ১৫:২)  সুতরাং কথায় আছেন সৎ সঙ্গে সর্গে বাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। তাই আমাদের উচিত অসৎ মানুষের সঙ্গ ত্যাগ করে ভাল মানুষের সঙ্গ গ্রহণ করা এবং সৎ আমল করা, অন্যথায় মুক্তি পাওয়া যাবে না।'

তাই যারা খারাপ ও অসৎ ব্যক্তিদেরকে সঙ্গীরূপে গ্রহণ করেছিল তারা কিয়ামতের দিন আফসোস করবে। আর যারা রাসূলের পথে চলবে তারাই সেদিন নাযাত পাবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করার অনুমতি পাবে । মহান আল্লাহ আমাদের প্রকৃ্ত সৎ বন্ধু নির্বাচন করার  তৌফিক দান করুন।

লেখক: হাসান আল-আফাসি 

বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকায় আইন বিভাগে পড়াশোনা করছেন।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম