১৯৮৯ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে সিলেট আলিয়া মাদরাসার ময়দানে একটি তাফসির মাহফিলের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ফ্যাসিবাদী সরকার মাহফিল বানচাল করার লক্ষ্যে সিলেটে হরতালের ডাক দেয়। কুরআনের বিপ্লবী সৈনিক আল্লামা সাঈদীও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, "যতক্ষণ সাঈদীর নাক থেকে নিঃশ্বাস নির্গত হতে থাকবে ততক্ষণ কেউ আমার গতি পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।"
নির্দিষ্ট দিনে তিনি তাঁর প্রিয় বন্ধু আল্লামা কামালউদ্দিন জাফরীকে সাথে নিয়ে বিমান যোগে সিলেট রওয়ানা দেন। সিলেটের আকাশে বিমান প্রবেশ করা মাত্রই স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ ওয়্যারলেসের মাধ্যমে আল্লামা সাঈদীকে বিমান থেকে অবতরণ না করার জন্য অনুরোধ জানান।
বিমান ল্যান্ড হওয়া মাত্র ডিসি, এসপি ও পুলিশ সুপার বিমানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ইসলামের এই সিপাহ্সালারকে ঢাকায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বিমান থেকে অবতরণ করেন। পুলিশ কর্তৃপক্ষ তখন তাঁকে পরিবেষ্টন করে আবার বিমানে উঠিয়ে দেয়। ফলে তিনি ঢাকায় ফিরে আসতে বাধ্য হন।
এই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে সিলেটের জনতা সমুদ্রের ন্যায় গর্জনে ফেটে পড়ে। গোটা সিলেট বিক্ষোভের কেন্দ্রভূমিতে পরিণত হয়।
আল্লামা সাঈদীকে বহনকারী বিমান ঢাকা বিমান বন্দরে অবতরণ করে। তিনি তৎক্ষণাৎ সড়কপথে পুনরায় সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। ইসলামের শত্রু ধর্মনিরপেক্ষতাবাদে বিশ্বাসে গোষ্ঠী ও তাদের দোসরদের যাবতীয় বাধা অতিক্রম করে তিনি সিলেট মাহফিলে উপস্থিত হন। তাঁকে ঘিরে জনতার সাগরে এক বিশাল ঊর্মিমালার সৃষ্টি হয়। তাওহীদি জনতার প্রচন্ড প্রতিরোধের মুখে সে দিনও বাতিল শক্তি কুরআনের সৈনিকদের কাছে পরাজিত হতে বাধ্য হয়।
আরও পড়ুনঃ
আল্লামা সাঈদী রহ.-এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা (পর্ব:০১)
আল্লামা সাঈদী রহ.-এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা (পর্ব:০২)
আল্লামা সাঈদী রহ.-এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা (পর্ব:০৩)
লেখক- শায়খ আসলাম হোসাইন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন।