আপডেট

বিপ্লবীদের গুপ্তহত্যা ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিআইইউ শিক্ষার্থীরা

Paragraph about 'Causes of Failure in English' for all classes

আত্নতত্ত্ব যে জেনেছে, দিব্যজ্ঞানী সেই হয়েছে!

একনজরে সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদুদী (রহঃ) | About Sayed Abul Ala Maududi

সাকিব আর বিতর্ক যেন একই সুত্রে গাঁথা | বিপিএলে সাকিব বিতর্ক | শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শাস্তি !

কুরআ‌নের পাখি আল্লামা সাঈদী রহ.- এর কিছু ঐতিহাসিক উ‌ক্তি!

বিমান ও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন যেসব রাষ্ট্রপ্রধান!

'যে কথা বলতে মানা': এডভোকেট সাজজাদুল ইসলাম রিপন

ড. ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা দেওয়া কতটুকু যুক্তিসঙ্গত?

হাঙ্গেরির ডেব্রেসেন বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ | হাঙ্গেরি ফুল-ফ্রী স্কলারশিপ-২০২৩| Hungary Scholarship-2023

আল্লামা সাঈদী রহ.-এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব:০২)

আল্লামা সাঈদী রহ.

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার কতিপয় মুসলমান  কুরআন তাফসির মাহফিলের আয়োজন করে আল্লামা সাঈদী রহ.-কে প্রধান মেহমান হিসেবে দাওয়াত দিয়েছিলেন। কিন্তু আবু জেহেলের উত্তরসুরীরা বসে থাকেনি। তারা জনগণের মধ্যে প্রচার করে যে, আল্লামা সাঈদী কুরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা দেন এবং তিনি বিদআতি। সুতরাং তাঁকে হত্যা করা সওয়াবের কাজ।

তাদের ভিত্তিহীন প্রচারে জনগণ বিভ্রান্ত হয়। তিনি আসার পথে রাস্তাতেই তারা তাঁকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওদিকে আল্লামা সাঈদীও নির্দিষ্ট দিনে তাফসির মাহফিলের দিকে যাত্রা করেন। কুরআন প্রেমিক জনতা নাস্তিকদের ষড়যন্ত্র আঁচ করতে পেরে পথিমধ্যে তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটি বাড়িতে উঠিয়ে নেন।

আল্লাহর কুরআনের সৈনিককে হত্যা করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে, এই ঘৃণ্য দৃশ্য সেদিনের সূর্যও বুঝি দেখতে চায়নি। গোটা আকাশ জুড়ে মেঘ ছেয়ে গিয়েছিল, বাতিলদের এই ঘৃণ্য তৎপরতায় মেঘমালাও নিজেকে স্থির রাখতে পারেনি। ফোটায় ফোটায় অশ্রু ঝরিয়েছিল সেদিনের বিস্তীর্ণ আকাশ জোড়া মেঘমালা। মুহুর্তেই আল্লাহর দুশমনেরা সেই বাড়িটিকে অস্ত্র হাতে ঘিরে ফেলল, যে বাড়িতে অবস্থান করছেন আল্লামা সাঈদী।

আল্লামা সাঈদী অজু করে প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন, তাঁর চির আকাঙিক্ষত শাহাদাতের, কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা ভিন্ন। কোনো একজন ব্যক্তি এই ভয়াবহ  ঘটনার  সংবাদ স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে পৌঁছে দিয়েছিল। সেখান থেকে সংবাদ চলে যায় চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম শহরের একজন কুরআন প্রেমিক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার আল্লামা সাঈদীকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি তাঁকে "আব্বা" বলে সম্বোধন করতেন। তিনি দুই ট্রাক পুলিশ নিয়ে উল্কার গতিতে ঘটনাস্থলের দিকে ছুটলেন। দ্রুত তিনি পৌঁছে গেলেন আল্লামা সাঈদীর কাছে। 

তিনি তাঁর অধিনস্থ বাহিনীকে আদেশ দিলেন, "গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ো এবং যাকে যেখানে পাবে পিটিয়ে হাড় হাড্ডি ভেঙ্গে দাও।" পুলিশ অফিসারের আদেশ আল্লামা সাঈদীর কর্ণে প্রবেশ করা মাত্রই তিনি প্রবল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেন, তিনি বললেন, "আমার জন্য আপনি এই এলাকার জনগণের উপর নির্যাতন করবেন না প্লিজ। ওরা বুঝতে পারেনি, ওরা ইসলামের দুশমনদের ষড়যন্ত্রের শিকার। আল্লাহর দিকে তাকিয়ে ওদেরকে ক্ষমা করে দিন। ক্রদ্ধ পুলিশ অ‌ফিসার তাঁর অনুরোধে সিদ্ধ‌ান্ত পরিবর্তন করে অধিনস্থদের আদেশ দিলেন, "ঠিক আছে, গণপিটুনি দেওয়ার প্রয়োজন নেই, শুধু দোষীদের খুঁজে বের করে পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দাও।"

চমকে উঠলেন আল্লামা সাঈদী - ভুলে গেলেন নাস্তিকদের নিষ্ঠুরতার কথা। তিনি করুণ কন্ঠে আবেদন জানালেন, আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, এই লোকগুলোর একটি পশমের ক্ষতিও আপনি করবেন না। বরং আপনি ওদেরকে কুরআনের কথা শোনার ব্যবস্থা করে দিন। পুলিশ অফিসার এবার নমনীয় হলেন, তিনি তাফসির মাহফিলের আয়োজন করলেন। আল্লামা সাঈদী পবিত্র কুরআন থেকে তাফসির শুরু করলেন।

আল্লামা সাঈদীকে হত্যার নেশায় যাদের চোখগুলো ক্ষণিক আগে অগ্নি গোলকের মতই জ্বলে উঠেছিল, তাঁর কন্ঠ নিঃসৃত পবিত্র কুরআনের বাণী তাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করা মাত্রই সেই চোখ থেকে অনুশোচনার অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। 

আল্লামা সাঈদী বিশ্বনবীর আদর্শের একনিষ্ঠ অনুসারী। বিশ্বনবীকে তায়েফের ময়দানে আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করা হয়েছে। তাঁর পবিত্র রক্তধারায় সেই শুষ্ক বালুকা মিশ্রিত মাটি শিক্ত হয়েছে। তিনি জ্ঞান হারা হয়ে পড়েছিলেন কিন্তু তাদেরকে কোনো অভিশাপ দেন‌নি বরং ফেরেস্তারা এসে তায়েফ ধ্বংস করতে চাইলে তিনি বাধা দিয়ে বললেন, ওদেরকে ধ্বংস করা যাবে না, ওদেরকে ধ্বংস করে দিলে আমি কার কাছে কালেমার দাওয়াত নিয়ে যাবো!

মক্কা বিজয়ের সময় তিনি মক্কাবাসীদের প্রতি ক্ষমার যে অপূর্ব দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, তা কিয়ামত পর্যন্ত প্রত্যেক মানুষের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবে। সেই নবীর অনুসারী আল্লামা সাঈদী রহ.। প্রেম ভালোবাসায় পরিপূর্ণ তাঁর হ্নদয়। তিনি কি পারেন সেই লোকগুলোর উপর প্রতিশোধ নিতে, যারা না বুঝে তাঁকে হত্যা করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল।

তাফসির মাহফিলের শ্রোতাগণ যখন অনুভব করলো, তাদেরকে আল্লামা সাঈদী সম্পর্কে ভুল বুঝানো হয়েছে, তখন বেদনা আর অনুশোচনায় তাদের ভেতর কাঁন্নার রোল সৃষ্টি হলো। তাঁরা সেদিন শপথ গ্রহণ করেছিল, যতদিন তারা এই পৃথিবীতে জীবিত থাকবে, ততদিন তারা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য জান মাল দিয়ে সংগ্রাম করবে। মহান আল্লাহর অসীম রহমতে আজ সেই সাতকানিয়া ইসলামি আন্দোলনের দূর্গে পরিণত হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ আল্লামা সাঈদী রহ.-এর জীবনে ঘটে যাওয়া বৈপ্লবিক ঘটনা! (পর্ব:০১)

লেখক- শায়খ আসলাম হোসাইন,

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম