শাইখ মুজাফ্ফার বিন মুহসিনের বই পড়ে আল্লামা সাঈদী রহ. কি তাঁর ৮০ বছরের সালাত পরিবর্তন করেছিলেন? (অভিমত থেকে একটি জঘন্য জালিয়াতি)
শাইখ মুজাফ্ফার বিন মুহসিন ও তার অনুসারীরা তাদের বইয়ের বাজার চাঙ্গা রাখার জন্য এবং হানাফী মাযহাবের সালাত কে ছোটো করার জন্য আল্লামা সাঈদী রহ. নামে জঘন্য মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। আলেম তো দূরের কথা কোনো সাধারন ভদ্র লোকের পক্ষেও কারাবন্দি একজন মজলুম কে ব্যবহার করে এইরকম মিথ্যাচার সম্ভব নয়। টাকার লোভে ও দলান্ধতায় নিজের ঈমানকে যারা বিক্রি করে দিতে প্রস্তুত, এটা কেবল তাদের পক্ষেই সম্ভব।
আল্লামা সাঈদীর প্রতি তাদের মিথ্যাচার মানুষ যখন আমলে নিলে না তখন তারা নিচের অভিমত প্রকাশ করা শুরু করল। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে এই অভিমতে তাদের মিথ্যাচার আরো স্পষ্টভাবে ফুটে উঠল। আমি আজকে বিকেলে এই লেখাগুলোর (নিচে ছবিগুলো দেওয়া হল) ব্যাপারে আল্লামা সাঈদীর সুযোগ্য পুত্র শ্রদ্ধেয় মাসুদ সাঈদী ভাইয়ের কাছে সত্যতা জানতে চাই। তিনি বলেন, "আল্লামা সাঈদীর ব্যাপারে শাইখ মুজাফফর বিন মহসিনের বক্তব্য সম্পূর্ণ ভুল, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। এটা আল্লামা সাঈদীর লেখা সত্য তবে মূল কাহিনী হচ্ছে, শাইখ মুজাফফর বিন মুহসিন যখন জেলে ছিলেন তখন তিনি তাঁর বইয়ের ব্যাপারে আল্লামা সাঈদীকে একটা অভিমত লেখার অনুরোধ করেন। তার অনুরোধে তিনি এই অভিমত লিখেন।
মাসুদ সাঈদী ভাই অপপ্রচারকারীদের কাছে জানতে চান, এই অভিমতের কোথাও লেখা আছে যে, মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবের বই পড়ে আল্লামা সাঈদী নিজের সারাজীবনের নামাজ পরিবর্তন করে দিয়েছেন? তিনি অর্ধশত বছর থেকে বিশ্বের আনাচে-কানাচে কুরআনের দাওয়াতি কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি কি মানুষকে ভুল নামাজের শিক্ষা দিচ্ছেন? তিনি শাইখ আলবানীর বই অনুসরণ করে নামায পড়েন, তাহলে আলবানীর বইটি কি ভুল ছিল? এরকম আরও অনেক প্রশ্ন রাখেন তিনি। অবশেষে এইরকম অপপ্রচার ও মিথ্যাচার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।"
আপনারাও দেখলে পাবেন এই অভিমতের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় আল্লামা সাঈদী রহ. শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ. "রাসূল (সাঃ)-এর নামাজ" বইটির কথা তুলে ধরেন। এবং তিনি এই বইটি ৯০ দশক থেকে মানুষকে পড়তে উৎসাহিত করে আসছেন, এটা তিনি অভিমতেও উল্লেখ করেছেন।" আমিও তাঁর একটি মাহফিলে শ্রোতাদেরকে এই বইটি সাজেস্ট করতে দেখেছি।
নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ.-এর বইয়ের বাহিরে মুযাফফর বিন মুহসিন এমন কী নতুন আবিষ্কার করেছেন যার কারণে আল্লামা সাঈদী শাইখ আলবানীর বই ছেড়ে দিয়ে তার বই আঁকড়ে ধরতে বাধ্য হয়েছেন?
তাছাড়া এই অভিমতের শেষে টীকায় তিনি শর্ত দিয়েছেন যে, কোনরূপ কাটছাঁট ছাড়া যেন তার অভিমত প্রকাশ করা হয়। আল্লামা সাঈদী রহ. তাঁর প্রজ্ঞা দ্বারা তখনই বুঝতে পেরেছিলেন যে, এই সুবিধাবাদী মহল তাঁর বক্তব্য কাটছাঁট করে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করবে, এজন্য তিনি এই শর্ত দিয়েছিলেন। তিনি যেটা আশঙ্কা করলেন তারা সেটাই করল। বরং তার চেয়েও জঘন্য কাজ তার নামে ছড়িয়ে দিল। এটা সুস্পষ্ট খেয়ানত, প্রতারণা এবং টাকা ইনকামের জন্য আল্লামা সাঈদীর নামে জঘন্য মিথ্যাচার।
শাইখ মুজাফফর বিন মহসিন এবং তাঁর অনুসারীদের কাছে আমার দুটো কথাঃ
আল্লামা সাঈদীর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট তিনি শাইখ নাসিরুদ্দিন আলবানীর বইয়ের অনুসরণ করেন। এখন মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবকে প্রমাণ করতে হবে যে, নামাজের পদ্ধতির ব্যাপারে তিনি তাঁর কিতাবে এমন নতুন পদ্ধতির বর্ণনা দিয়েছেন যা আলবানী রহ. উল্লেখ করেননি। যদি তিনি সহিহ হাদিসের আলোকে এমন কোনো প্রমান দেখাতে না পারেন তাহলে রাস্তাঘাটে হাট-বাজারে এইরকম মিথ্যাচার বন্ধ করে নিজের ভুল স্বীকার করে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে। আর যদি দেখাতে পারেন তাহলে আলবানী রহ.-এর বইটির জাল হাদীসে রচিত এবং তাঁর ইলমি দুর্বলতা রয়েছে এই স্বীকারোক্তি দিয়ে তাঁকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হবে।
এখন আপনারা কোন দিকে যাবেন সেটা জাতি দেখতে চায়।
فهل إلى خروج من سبيل
লেখক- শায়খ আসলাম হোসাইন,
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন।