ডিএমপি কার্যালয়ে জামায়াতের প্রতিনিধি দল 'সভা সমাবেশ করা নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার, নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয়'- জামায়াতের প্রতিনিধি দল।
আগামী ১০ জুন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে সমাবেশ ও মিছিলে সহযোগিতা চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যালয়ে পুলিশ কমিশনার বরাবর একটি আবেদন জমা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। আজ ৬ জুন বিকেল ৪-১০ মিনিটে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে জামায়াতের ০৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়ে এ আবেদন জমা দেন। প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীন ভূইয়া, এডভোকেট আজমত হোসাইন, এডভোকেট তারিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আব্দুল করিম, এডভোকেট সুজাদ মিয়া, এডভোকেট এম এ মালেক ইমন, এডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
আবেদনে বলা হয়, আগামী ১০ জুন ২০২৩ শনিবার দুপুর ২-০০ টায় দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিরোধ, আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও ওলামায়ে কেরামের মুক্তি এবং কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থাসহ জনগনের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ ও মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী। মিছিলটি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়, বিজয়নগর ও নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে কাকরাইল মোড়ে গিয়ে শেষ হবে। সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি সুশৃংখল ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।
ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে আবেদন জমা দেয়ার পর প্রতিনিধি দলের প্রধান অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান উপস্থিত মিডিয়ার সামনে প্রেস ব্রিফিং করেন। তিনি বলেন, আমরা ১০ জুন দুপুর ২-০০ টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত মিছিল ও সমাবেশের জন্য সহযোগিতা চেয়ে আবেদন জমা দিয়েছি। পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে অতি: উপ-পুলিশ কমিশনার সৈয়দ মামুন মোস্তফা আবেদন পত্রটি গ্রহণ করে আমাদের একটি অনুলিপি দিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি এ বিষয়ের সিদ্ধান্ত আমাদেরকে জানাবেন বলেছেন।
তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। এ দেশে তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। জনগণের অধিকার আদায়ে ভূমিকা পালন করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। জামায়াতের নিবন্ধনের বিষয়ে একজন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এমতাবস্থায় নির্বাচন কমিশনের জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল একটি বে-আইনী কাজ হয়েছে। এছাড়াও রাজনৈতিক সভা সমাবেশ করতে নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই, নিবন্ধন প্রয়োজন নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি নির্দিষ্ট প্রতিকে নির্বাচন করার জন্য। সভা-সমাবেশ করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। সংবিধানের ৩৭ নম্বর ধারায় এব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা মনে করি পুলিশ প্রশাসন আমাদের সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবেন।
উল্লেখ্য যে, একই দাবীতে ৫ জুন রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে সমাবেশ ও মিছিল করতে চেয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু কর্মদিবসের (ওয়ার্কিং ডে) কথা বলে ডিএমপি কমিশনার আবেদনটি নাকচ করে দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ জুনের পরিবর্তে আগামী ১০ জুন শনিবার ছুটির দিনে সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করে জামায়াত। সমাবেশ ও মিছিল সফল করতে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পক্ষ থেকে গতকাল ৫ জুন অনলাইনে পুলিশ কমিশনার বরাবর ই-মেইলে আবেদন করে এবং আজ ৬ জুন একই আবেদন ডিএমপি কার্যালয়ে প্রতিনিধি দল স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে আবেদন জমা দেয়।
লেখক- ড. মো: শফিকুল ইসলাম মাসূদ
সেক্রেটারি, বাংলাদেশ জামআতে ইসলামী, ঢাকা দক্ষিণ।