প্রশ্ন: যেসকল গ্রহণযোগ্য কারণে রোযা ভঙ্গ করা জায়েজ? রোযা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য কারণ কী কী?
উত্তর: রোযা ভঙ্গের কারণসমূহ হচ্ছে: ১. অসুস্থতা, ২. সফর। যা পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,'আর যে ব্যক্তি অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে (সে রোযা ভঙ্গ করে) অন্য দিনে তা কাযা আদায় করে নিবে।' (সূরা বাকারা: ১৮৫)
৩. গর্ভবতী নারীর নিজের বা শিশুর জীবনের আশঙ্কা করলে রোযা ভঙ্গ করবে। ৪. সন্তানকে দুগ্ধদানকারিণী নারী যদি রোযা রাখলে নিজের বা সন্তানের জীবনের আশঙ্কা করে তবে রোযা ভঙ্গ করবে।
৫. কোনো বিপদগ্রস্ত মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে রোযা ভঙ্গ করা: যেমন পানিতে ডুবন্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার, আগুন থেকে বাঁচাতে গিয়ে দরকার হলে রোযা ভঙ্গ করা।
৬. আল্লাহর পথে জিহাদে থাকার সময় শরীরে শক্তি বজায় রাখার জন্য রোযা ভঙ্গ করা। কেননা নবী করীম সাতারা মক্কা বিজয়ের সময় সাহাবিদেরকে বলেছিলেন, (ভর্তা), ৩) 'আগামীকাল তোমরা শত্রুর মোকাবিলা করবে, রোযা ভঙ্গ করলে তোমরা অধিক শক্তিশালী থাকবে, তাই তোমরা রোযা ভঙ্গ কর।' (মুসলিম, অধ্যায়: রোযা, অনুচ্ছেদ: সফরে কাজের দায়িত্ব থাকলে রোযা ভঙ্গ করার প্রতিদান।)
প্রশ্ন: বৈধ কোনো কারণে রোযা ভঙ্গ করলে দিনের বাকি অংশ কি রোযা রাখতে হবে?
বৈধ কোনো কারণে রোযা ভঙ্গ করলে দিনের বাকি অংশ রোযা অবস্থায় থাকা আবশ্যক নয়। কেননা সে তো গ্রহণযোগ্য ওযরের কারণেই রোযা ভঙ্গ করেছে। এজন্য এ মাসআলায় বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে: কোনো রোগী যদি অসুস্থতার কারণে দিনে রোযা ভঙ্গ করে আর দিন শেষ হওয়ার আগেই সুস্থ হয়ে যায়, তবে দিনের বাকি অংশ রোযা অবস্থায় থাকার কোনো আবশ্যকতা নেই। কোনো মুসাফির যদি রোযা ভঙ্গ অবস্থায় দিন থাকতেই সফর থেকে ফিরে আসে তারও দিনের বাকি অংশ রোযা অবস্থায় থাকার আবশ্যকতা নেই। অনুরূপ বিধান ঋতুবতী নারীরও কেননা এরা সবাই বৈধ কারণে রোযা ভঙ্গ করেছে। তাই ঐ দিবস তাদের জন্যই। তাতে তাদের প্রতি সিয়ামের আবশ্যকতা নেই। কেননা শরীয়ত তাদেরকে রোযা ভঙ্গের অনুমতি প্রদান করে আবার তা আবশ্যক করবে না।
এর বিপরীত মাসআলা হচ্ছে, রমযান মাসের চাঁদ দেখা গেছে একথা যদি দিনের বেলায় প্রমাণিত হয়, তবে খবর পাওয়ার সাথে সাথে রোযার নিয়ত করে নিতে হবে এবং দিনের বাকি সময় রোযা অবস্থায় কাটাতে হবে। উভয় মাসআলায় পার্থক্য সুস্পষ্ট। কেননা যখন দিনের বেলায় রমযান মাস শুরু হওয়ার কথা প্রমাণিত হয়েছে, তখন তাদের ওপর সে দিনের সিয়াম পালন করা ওয়াজিব হয়ে গেছে। কিন্তু না জানার কারণে তাদের ওযর গ্রহণযোগ্য এবং তাদের সিয়াম বিশুদ্ধ। এ কারণে তারা যদি জানতে পারত যে, আজ রমযান শুরু হয়েছে, তবে রোযা রাখা তাদের জন্য আবশ্যক হতো।
তথ্যসুত্র:
শায়খ মুহাম্মদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন (ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম)/ দারুস সালাম বাংলাদেশ