আপডেট

বিপ্লবীদের গুপ্তহত্যা ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিআইইউ শিক্ষার্থীরা

Paragraph about 'Causes of Failure in English' for all classes

আত্নতত্ত্ব যে জেনেছে, দিব্যজ্ঞানী সেই হয়েছে!

একনজরে সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদুদী (রহঃ) | About Sayed Abul Ala Maududi

কুরআ‌নের পাখি আল্লামা সাঈদী রহ.- এর কিছু ঐতিহাসিক উ‌ক্তি!

বিমান ও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন যেসব রাষ্ট্রপ্রধান!

হাঙ্গেরির ডেব্রেসেন বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ | হাঙ্গেরি ফুল-ফ্রী স্কলারশিপ-২০২৩| Hungary Scholarship-2023

এ ডি আর এস: বাঙালীদের নতুন প্রযুক্তি | এ ডি আর এস কি ? | ADRS System in cricket

সাকিব আর বিতর্ক যেন একই সুত্রে গাঁথা | বিপিএলে সাকিব বিতর্ক | শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শাস্তি !

এক কালেমায় রুটি রুজি আর এক কালেমায় ফাঁসী (কালেমা এক না ভিন্ন?)

কারাগারে আল্লামা সাঈদীর সাথে সাক্ষাৎ মাসুদ সাঈদী | আল্লামা সাঈদীর নসিহত

আল্লামা সাঈদীর নসিহত
 ১২ মার্চ ২০২৩, দীর্ঘ ১২ বছর ৯ মাস পর আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর সাথে ৩০ মিনিটের জন্য দেখা করার সুযোগ পান তার সন্তানরা। এসময় আল্লামা সাঈদী তার সন্তানদের বেশিভাগ সময়ই শুধু নসিহত করেন। আল্লামা সাঈদীর সাথে দেখা করার সেই আবেগপ্রবণ মুহুর্ত নিয়ে ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন তার সন্তান মাসুদ সাঈদী। মাসুদ সাঈদীর ফেসবুক পেইজ আমরা তার লেখাটি এখানে তুলে ধরছি।

কারাগারে আল্লামা সাঈদীর সাথে সাক্ষাৎ মাসুদ সাঈদী:


আমার পরম শ্রদ্ধেয় পিতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হাফিজাহুল্লাহ'র সাথে দেখা করে কাশিমপুর কারাগার থেকে ফিরছি। সাক্ষাতের আগে বরাবরের মতো আবেদন জমা দিয়ে দুই ঘন্টারও বেশী সময় বসে থাকতে হয়েছে। এভাবে বসিয়ে রেখে আনাদেরকে কষ্ট দিয়ে ওরা যে কি আনন্দ পায়, তা গত ১৩ বছরেও বুঝতে পারলাম না!


দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে সাক্ষাতের ডাক এলে আব্বার সাথে সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত রুমে ঢুকেই আব্বাকে জড়িয়ে ধরে তার কপালে লম্বা করে একটা চুমু দিয়েছি। বিশ্বাস করুন! ঐ কপালে চুমু দেয়ার পর আমার সমস্ত শরীরে এক শিহরণ বয়ে গেছে। আমার শরীর এক ধরনের প্রশান্তিতে ভরে গেছে। আহা! কতো পবিত্র ঐ কপাল! আলহামদুলিল্লাহ।


আমার সাথে আব্বার সাক্ষাত হলো ২ মাস পর। গত মাসের সাক্ষাতে আমি দুবাই ও তুরস্ক সফরে থাকার কারনে আমার সাথে আব্বার দেখা হয়নি। তাই পরিবারের অন্য সকল সদস্যদের থেকে আব্বার সাথে আমার সাক্ষাতের পেরেশানী একটু বেশী-ই ছিল। আব্বার সাথে সাক্ষাতের এই মুহূর্তটা আমার কাছে কত যে দামী- তা বোঝানোর ভাষা তো আমার জানা নেই।


আমরা সাক্ষাতের সময় পাই মাত্র ৩০ মিনিট। সাক্ষাতের বেশীরভাগ সময়ই আমাদের কেটে যায় আব্বার নসিহত শুনে। আমরা তন্ময় হয়ে আব্বার পবিত্র মুখ নি:সৃত কথাগুলি শুনতে থাকি। মনে হয় যেন আরো শুনি, আরো শুনি, আরো শুনি। শোনার এ সময়টুকুন যেন কভু শেষ না হয়! আজকে আব্বা রমাদানের বরকত ও ফজিলত নিয়ে আমাদেরকে নসিহত করলেন।


আব্বা বললেন, 'রমাদান সমাগত। রমাদান মাস সওয়াব অর্জনের বসন্ত মৌসুম। পরকালের পাথেয় হাসিলের সুবর্ণ সময়. পাপী-তাপীদের পাপ মুক্তির মাহেন্দ্রক্ষণ। রমজানের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রমাদান বরকতময় মাস, তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাস রোজা পালন আল্লাহ তোমাদের জন্য ফরজ করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়; বন্ধ করে দেওয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো।' 


'রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের এ মাসে গুরুত্বপূর্ণ অনেক আমল রয়েছে।  আব্বা বললেন, তন্মধ্যে সর্বাপেক্ষা ১০টি আমল হলো- ১. রোজা পালন ২. জামায়াতে নামাজ আদায় ৩. সাহরি খাওয়া ৪. ইফতার করা ও করানো ৫. তারাবির নামাজ পড়া ৬. অর্থসহ বুঝে কোরআন তেলাওয়াত ৭. ইতিকাফ করা ৮. লাইলাতুল কদর তালাশ ৯. জাকাত দেয়া ও বেশী বেশী দান করা ১০. তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া।'


আব্বা বললেন, 'সিয়াম-সাধনা ও ইবাদতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন মাস এটি। তাই প্রতিটা মুহূর্তকে আমাদের সঠিক ইবাদতের মাধ্যমে কাটাতে হবে। এবং সেই সাথে পবিত্র রমজান মাসের শিক্ষা সারা বছর ধরে রেখে সঠিকভাবে ইসলামের পথে প্রতিটা দিন চলতে হবে।'


আব্বা অনেক কথা বললেন, কিন্তু নিজের শরীরের কথা কিছুই বললেন না। চোখ দেখে প্রশ্ন করে জানতে পারলাম, কয়েকদিন যাবত আব্বার ঘুমের কষ্ট হচ্ছে। কখনো কখনো রাতে সামান্য ঘুম হয়, আবার কোনো কোনো রাতে মোটেও ঘুম হচ্ছেনা। সুগার অনেক বাড়তি। আর হাঁটু কোমড়ের ব্যাথা! সে কথা আর কি বলবো?


আমার আব্বার বয়স এখন ৮৪। আব্বা গত ৪৯ বছরের ডায়াবেটিক পেশেন্ট। আব্বার হার্টে ৫টি রিং বসানো আছে। এছাড়া আব্বা দীর্ঘদিন যাবৎ আর্থাইটিস রোগেও আক্রান্ত। বিগত ৭ বছরের মধ্যেও কারাগার কর্তৃপক্ষ আব্বার হাঁটু কিংবা কোমড়ের অথবা ডায়াবেটিস কিংবা হার্টের সামান্য চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেনি। গত ৭ বছরে আমরা বহুবার কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আব্বাকে হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেয়ার জন্য বহু আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। ইদানিং আব্বা শারীরিকভাবে বেশ কষ্টে আছেন। যে কারনে আব্বা একনাগাড়ে বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না এমনকি তিনি দাঁড়িয়ে নামাজও আদায় করতে পারছেন না। হাঁটু ও কোমড়ের তীব্র ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন আব্বা। 


সন্তান হয়ে পিতার সামান্য চিকিৎসাটুকুন করাতে পারছিনা!! কষ্টে বুক ফেটে কান্না আসে। হায়! এ কষ্টের কথাগুলো আমরা কার কাছে বলবো? এতোকিছুর পরেও আলহামদুলিল্লাহ আমার আব্বা আল্লামা সাঈদী হাফিজাহুল্লাহ মানসিকভাবে মোটেও ভেঙে পড়েননি। তিনি সম্পূর্ণভাবেই মহান আল্লাহ তায়ালার উপর তাওয়াক্কুল করে আছেন। নিজেকে পরিপূর্ণভাবেই আল্লাহ তায়ালার কাছে সমর্পন করেছেন।


আব্বার শারিরীক সুস্থতার জন্য তিনি আপনাদের সকলের কাছে বিশেষ দোয়া চেয়েছেন।আপনারা দোয়া করবেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন তাঁকে সুস্থ রাখেন, ভাল রাখেন। তার নেক হায়াত দারাজ করেন। তাকে যেন আবারো আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত ওয়াল জালাল কোরআনের ময়দানে ফিরিয়ে দেন।


পুনশ্চঃ আমাকে যারা আব্বার কাছে আপনাদের সালাম পৌঁছাতে বলেছিলেন আমি আপনাদের প্রত্যেকের সালাম আব্বার কাছে পৌঁছে দিয়েছি। আব্বা আপনাদেরকেও সালাম জানিয়েছেন।

তথ্যসুত্র:

Masood Sayedee-মাসুদ সাঈদী

Fb:facebook.com/masood.sayedee

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম