এ ডি আর এস: বাঙালীদের নতুন প্রযুক্তি | এ ডি আর এস কি ? | ADRS System in cricket

এ ডি আর এস কি ?

বিপিএলে এ ডি আর এস পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে অর্থাৎ অল্টারনেট ডিআরএস পদ্ধতি।  এই এ ডি আর এস পদ্ধতি বিপিএল কে একটা কমেডি সার্কাসে পরিণত করেছে সে ব্যাপারটা  কেউই অবশ্য অস্বীকার করতে পারবে না। এ ডি আর এস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করব । চলুন তবে শুরু করা যাক।

ঢাকা ডমিনাটরস এবং খুলনা টাইগার্স এর মধ্যকার ম্যাচে সৌম্য সরকারের আউট কে কেন্দ্র করে লিটারেলি একটা কমেডি সার্কাসে পরিনত হয়েছিল। সৌম্য সরকার ব্যাটে থাকা কালীন সময় বোলার আবেদন করলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ আউট দেন। সাথে সাথে তিনি এ ডি আর এস এর সহায়তায় যান। রিপ্লে দেখে আম্পায়ার আউট এর সিদ্ধান্ত জানালে সৌম্য আবার আম্পায়ার এর সাথে বিবাদে জড়ায়। 


আম্পায়ার আবার   ৩য়   আম্পায়ার   এর  সহায়তা নেয়৷ তখন   আবার রিপ্লেতে দেখে নট আউট ডিসিশন দেন। তখনই মুলত বিতর্ক শুরু হয়। 


এডিআরএস এ মুলত স্নিকমিটার নাই।  অর্থাৎ আল্ট্রাএজ দেখানোর সিস্টেম নাই সেহেতু ভিডিও কে একশন রিপ্লেতে সুপার স্লো-মোশন প্রযুক্তি ব্যাবহার করে স্নিকোমিটারের অল্টারনেট ডিআরএস হিসেবে ব্যাবহার হয়। এখানে মুলত ফ্রেমটাকে আমপ্লিফাই করলে যে শব্দ পাওয়া যায় তার উপর ভিত্তি করে একটা আন্দাজ করা যায় বলটা কোথাও টাচ হয়েছে কিনা। এটা  মলত একটা আন্দাজ-নির্ভর ডিসিশন। 


প্রথমত আম্পায়ার ভিডিও রিপ্লেতে দেখে যে কোথাও ব্যাটের স্পর্শ হয়েছে কিনা। যদি চোখের দেখাতে সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন তখন ভিডিও জুম করে সুপার স্লো-মোশন করে আমপ্লিফাইড শব্দ শুনে সিদ্ধান্ত দেন। যেটা এ ডি আর এস নামে পরিচিত। অডিও আমপ্লিফাইড করা হয়ে গ্যার গ্যার নয়েজ আসে। তখন বলের সাথে ব্যাট এর স্পর্শ না হলেও মনে হয় স্পর্শ হয়েছে।  


বিপিএল,  বাংলাদেশের সবথেকে বড় ঘরোয়া লিগ।  অনেকের মতে তথাকথিত বিশ্বের ২য় বৃহত্তম লিগ। এতো বড়ো টুর্নামেন্টে ডি আর এস সিস্টেম রাখা সম্ভব না। বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। বিপিএলের মান উন্নয়ন কর‍তে হলে অবশ্যই গভর্নিং কাউন্সিল কে এইসব বিষয় এর উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে। 


৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তে ১ম বিপিএল  আসরের এর উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি হয় শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম, ঢাকায়। উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ এর রাষ্ট্রপতি। এই আসরে অংশ নেয় মোট ৬ টি ফ্রেঞ্চাইজি দল। আসরের প্রথম খেলা হয় ১০-ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ এবং ফাইনাল খেলা হয় ২৯-ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২। 


শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা এবং  জহুরুল হক স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম।  সর্বমোট ৩৩-টি খেলা হয়। যার ২৫টি ঢাকায়, আর বাকি ৮টি হয় চট্টগ্রাম । ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ফাইনাল ম্যাচের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় বিপিএল এর প্রথম আসর। ৬ টি দল দল একে অপরের বিপক্ষে দুইটি করে ম্যাচ খেলে রাউন্ড রবিন পদ্ধতি তে হোম আর এওয়ে হিসেবে। 


পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ ৪ দল পরবর্তীকালে নক-আউট রাউন্ড খেলে। সিলেট  রয়্যালস  এবং চট্টগ্রাম কিংস সেমি-ফাইনালে অগ্রসর হতে পারেনি। দুরন্ত রাজশাহী, খুলনা রয়েল বেঙ্গল ,  ঢাকা গ্লাডিয়েটরস এবং বরিশাল  বার্নার্স  সেমি-ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। পরবর্তীতে ঢাকা গ্লাডিয়েটরস ফাইনালে বরিশাল  বার্নার্স হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয়।

 ২য় আসর এর ফাইনালে চিটাগং কিংসকে ৪৩ রানে হারিয়ে  দ্বিতীয়বার বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা গ্লাডিয়েটরস।


২০২৩ সালে শুরু হয় বিপিএল এর নবম আসর। এই আসর কে ঘিরে যত বিতর্ক শুরু হয়। সব থেকে আলোচিত বিতর্ক এ ডি আর এস তথাকথিত অলটারনেটিভ ডি আর এস।


লেখক- মোঃ মাহমুদ তালুকদার

শিক্ষার্থী, ইন্সটিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (আই.এস.টি) ডিপার্টমেন্ট: সি.এস.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম