আপডেট

বিপ্লবীদের গুপ্তহত্যা ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিআইইউ শিক্ষার্থীরা

Paragraph about 'Causes of Failure in English' for all classes

আত্নতত্ত্ব যে জেনেছে, দিব্যজ্ঞানী সেই হয়েছে!

একনজরে সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদুদী (রহঃ) | About Sayed Abul Ala Maududi

সাকিব আর বিতর্ক যেন একই সুত্রে গাঁথা | বিপিএলে সাকিব বিতর্ক | শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শাস্তি !

কুরআ‌নের পাখি আল্লামা সাঈদী রহ.- এর কিছু ঐতিহাসিক উ‌ক্তি!

বিমান ও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন যেসব রাষ্ট্রপ্রধান!

'যে কথা বলতে মানা': এডভোকেট সাজজাদুল ইসলাম রিপন

ড. ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা দেওয়া কতটুকু যুক্তিসঙ্গত?

হাঙ্গেরির ডেব্রেসেন বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ | হাঙ্গেরি ফুল-ফ্রী স্কলারশিপ-২০২৩| Hungary Scholarship-2023

জাতীয় পাঠ্যপুস্তক পুনঃমুদ্রণের আহ্বান - ড. মিজানুর রহমান আজহারি

সম্প্রতি বাংলাদেশের মাধ্যমিক শ্রেণির নতুন জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে ইসলাম ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ আমল পর্দার কটুক্তি করে কয়েকটি গল্প বইয়ে যুক্ত করা হয়। এ ছাড়াও নানা ভাবে পাঠ্যপুস্তকে ইসলাম বিদ্বেষী আকিদা ও কথাবার্তা যুক্ত করা হয়। যা থেকে নবীন শিক্ষার্থীরা ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে ভুল মনোভাব ও ভুল শিক্ষা পাওয়ার প্রবল অবস্থা সৃষ্টি হবে। তাই এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল সমালোচনা হচ্ছে এবং প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অতি জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা ও ইসলামী স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারি এগুলো সংশোধন করে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক পুনঃমুদ্রণের আহ্বান জানিয়েছেন।

কী শিখছে নতুন প্রজন্ম? | জাতীয় পাঠ্যপুস্তক পুনঃমুদ্রণের আহ্বান


শায়েখ ড. মিজানুর রহমান আজহারি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক পুনঃমুদ্রণের আহ্বান জানিয়ে, 'কী শিখছে নতুন প্রজন্ম?' এ শিরোনামে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেন। আমরা পাঠকদের উদ্দেশ্য তার লেখাটি হুবহু এখানে শেয়ার করছি-


'সম্প্রতি ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড’ কর্তৃক প্রণীত সপ্তম শ্রেণির ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বইয়ের বেশ কিছু পাঠ এখন জাতীয় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বইয়ের ‘প্রসঙ্গ কথা’ অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে ধর্ম, বর্ণের বিষয়টি নাকি বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। অথচ বেশকিছু পাঠ এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মের মৌলিক রীতিনীতি ও মূল্যবোধের স্পষ্টত বিরুদ্ধে যাওয়া সত্বেও সেটার বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা করা হয়নি। অবশ্য এদেশের ক্রমবিকাশ, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি কিংবা সমাজ ব্যবস্থার কথা তুলে ধরতে গৎবাঁধা কিছু নির্দিষ্ট বিষয়কে হাইলাইট করা এবং বিশেষ একটা ধর্মগোষ্ঠীকে কোণঠাসা করা করা ছাড়া অভিন্ন কিছু এখনো পর্যন্ত খুব একটা দেখা যায় না। এটা আমাদের চিন্তার দৈন্যতা নাকি অদৃশ্য কোন প্রভাবকের সীমারেখা তা বোঝা বড়ই কঠিন।


বইয়ের মূল পাঠে ‘সম্প্রদায়’ অধ্যায়ে ‘খুশি আপা’ এদেশের মুসলিম সম্প্রদায় ‘অখুশি’ হওয়ার মতো বেশকিছু কথাবার্তা বলেছেন। ‘চিন্তার খোরাক’ দিতে গিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে ‘মনে মনে’ নিজেদের জেন্ডার নির্ধারণ করার মতো মহাবিড়ম্বনা ও দুশ্চিন্তার খোরাকও দিয়ে ফেলেছেন। ‘মনে মনে’ ছেলে থেকে মেয়ে কিংবা মেয়ে থেকে ছেলে হয়ে যাওয়া বইয়ের ঐ থিওরি যে দেশের আদমশুমারি থেকে শুরু করে নারী-পুরুষের জন্য সংরক্ষিত বা পৃথকীকৃত সকল ব্যবস্থাপনাকে একেবারে হ-য-ব-র-ল করে দিবে তা আর সুস্থ মস্তিষ্কওয়ালাদের বুঝতে বাকি থাকার কথা না।'


পর্দার কটুক্তি সংশোধন করে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক পুনঃমুদ্রণের আহ্বান জানিয়ে ড. মিজানুর রহমান আজহারি এরপর লিখেন-


'এবার আরেকটা অধ্যায়ে চোখ বুলানো যাক। অধ্যায়ের নাম ‘সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তনে ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা’। এখানেও ‘খুশি আপা’ এদেশের মুসলিম সমাজকে বিস্মিত করার মতো যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। তবে এবারের আঘাতটা আর ইশারা ইঙ্গিতে না। একদম সরাসরি ইসলামের ফরজ বিধান ‘পর্দা’-কে টার্গেট করে। ১২১ নং পেইজে ‘খুশি আপা’ বেগম রোকেয়ার ‘অবরোধবাসিনী’ থেকে যে পাঁচটি কাহিনী শোনালেন তা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে ইসলামের ‘ফরজ বিধান’ পর্দার প্রতি আলাদা একটা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গীর ছাঁপ ফেলতে যথেষ্ট। তাদেরকে পর্দাপ্রথা সম্পর্কে অবগত করতে ‘খুশি আপা’ ’অবরোধবাসিনী’ থেকে সুবিধামতো পাঁচটি কাহিনী শোনালেও পর্দা সম্পর্কে ইসলামের অবস্থান এবং ক্ষেত্রবিশেষে এর শিথিলতার দিকগুলো নিয়ে যৌক্তিকভাবে কিছুই বলেন নি। একপেশে পর্দাকে কৌশলে কটাক্ষ করার কাহিনী আওড়ালেন শুধু। অবচেতন মন নিয়ে আমাদের কোমলমতি শিশুরা যখন এগুলো পড়বে; তখন পর্দার ব্যাপারে একটা নেগেটিভ মাইন্ডসেট নিয়ে তারা বড় হবে।'


ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব সংশোধন করে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক পুনঃমুদ্রণের আহ্বান জানিয়ে ড. মিজানুর রহমান আজহারি এরপর লিখেন-


'আবার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজ বিজ্ঞান বইয়ে মানব জাতির ক্রমবিকাশ বোঝাতে এমন কিছু ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছে যা সুকৌশলে শিক্ষার্থীদের মনে চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্বের মতো ঈমান বি*ধ্বং*সী মতবাদের বীজ বপন করবে। নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকেও যা বিদ্যমান। জেনে রাখা দরকার— বিবর্তন প্রমাণিত কিন্তু ‘চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব’ প্রমা*ণিত ন*য়। সহিহ বুখারীর বর্ণনামতে— প্রথম নবি ও আদি পুরুষ আদম (আ.) ৬০ গজ লম্বাকৃতির ছিলেন। ধীরে ধীরে মানুষের আ*কৃতি ছোট হতে হতে মানুষ তার বর্তমান আকৃতি লাভ করেছে। এটা মানব জাতির বি*বর্তন। কিন্তু তথাকথিত ‘বি*বর্তনবাদ তত্ত্ব’ মানুষের মন-মস্তিষ্ক প্রসূত একটি ধারণা, যা কুরআনের সৃষ্টিদর্শনের সাথে সাং*ঘর্ষিক। বানর বা শিম্পাঞ্জি জাতীয় অন্য কোন প্রজাতি থেকে মানুষ এসেছে— এই মতবাদ সর্বৈব অ*সত্য। বিজ্ঞান যতো অগ্রসর হবে বিবর্তনবাদের ধারণা ততো অ*কার্যকর হয়ে পড়বে ইনশাআল্লাহ।'


জাতীয় পাঠ্যপুস্তক পুনঃমুদ্রণের আহ্বান জানিয়ে ড. মিজানুর রহমান আজহারি সর্বশেষ লিখেন-


'লেখার কলেবর লম্বা হয়ে যাওয়ার আশংকায় সামান্য কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করলাম। আর ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড’-এর কর্তাব্যক্তিদের দায়িত্বজ্ঞান সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে চাই না। মাত্র কয়েক দশক আগে ঘটে যাওয়া মুক্তিযু*দ্ধের ইতিহাস, দেশের সংবিধান এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত তথ্য বিভ্রাট ঘটিয়ে গত বছরের মতো এবারও ওনারা হাইকো*র্টের আমন্ত্রণ পেয়েছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে কেবল নবম-দশম শ্রেণির তিনটি বইয়ে তথ্যবিভ্রাটের ঘটনা মিলেছে ৩০ টিরও বেশি। আর সবচেয়ে বেশি ভুল ধরা পড়েছে— দেশের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযু*দ্ধ নিয়ে লেখায়। এটা খুবই দুঃখজনক।


জরুরী ভিত্তিতে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড’-এর প্রতিটি বই, যারা প্রকৃতার্থেই বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও ইসলামিক স্কলার; তাদের দিয়ে রিভাইজ ও রি-এডিট শেষে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক পুনঃমুদ্রণের আহ্বান জানাই।'

 ড. মিজানুর রহমান আজহারি



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম